প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৫৯
মতলবে সরকারি খাল দখলের প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা ও হয়রানির অভিযোগ

মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের ঘড়ে ভাঙ্গা এলাকায় সরকারি খাল দখলের প্রতিবাদ করায় ওই প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মনিরুজ্জামান নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা মামলা করেছে। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করায় সোমবার (১৮ আগস্ট ২০২৫) সকাল সাড়ে দশটায় খাদেরগাঁও ইউনিয়নের ঘড়ে ভাঙ্গা সরকারি খালের পাশে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
|আরো খবর
ঘড়ে ভাঙ্গা গ্রামে ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি খাল ভরাট করায় ফসলি জমিগুলো হুমকির মুখে পড়বে আশঙ্কায় এলাকাবাসীর পক্ষে মো. হালিম তালুকদার বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি পাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
ঘড়ে ভাঙ্গা গ্রামের মৃত আলী হোসেন বেপারীর ছেলে মনিরুজ্জামান তাদের পারিবারিক কবরস্থানের পাশে পুটিয়া-ঘড়ে ভাঙ্গা -খাদেরগাঁও রাস্তার সাথে যে সরকারি খালটি রয়েছে সেখানে বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে। পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও নেই। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নায়েরগাঁও ইউনিয়ন ভূমি সহকারীকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর পর কিছু অংশ বালু সরিয়ে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেন মনিরুজ্জামান। একাধিকবার বলার পরও বালু সরিয়ে না নেয়ায় সম্প্রতি ওই মনিরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী।
জেল থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদকারী জসিম, জাকির, এবিএম মুসা, হালিম, আনিস, সেলিম, শাহআলম ও মহসিনের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আরো বলেন, মনিরুজ্জামান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য। সে ফ্যাসিস্টের দোসর হয়েও এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছে। তার ভাতিজাদের হুমকিতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
ষাটোর্ধ্ব বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম তালুকদার, মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের জন্মের আগে থেকেই দেখে আসছি এ খালটির ধনাগোদা নদীর সাথে সংযোগ আছে। খালটিতে সবসময় পানি থাকায় এলাকার অধিকাংশ মানুষ বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে ধান, গম, ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলাদি চাষ করেন। হঠাৎ করে বালু দিয়ে ভরাট করে সরকারি খাল দখল ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় দুঃশ্চিতার পড়ে যায় কৃষকরা।
মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের পারিবারিক কবরস্থান প্রশস্ত করার জন্যে বালু ফেলে ভরাট করছিলাম। গাইড ওয়াল না দেয়ায় সরকারি খালের কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। কিছু বালু সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকিগুলোও সরিয়ে নেয়া হবে।
নায়েরগাঁও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা দীপক কুমার চক্রবর্তী বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে মনিরুজ্জামানকে বলে দিয়েছি, সরকারি খালের মধ্যে বালু ফেলে যতোটুকু জায়গা দখল করা হয়েছে সে বালু সরিয়ে ফেলতে হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই তহশীলদারকে পাঠানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে, সরকারি খালে যে বালু দিয়ে ভরাট করেছে তার নিজ দায়িত্বে সরিয়ে ফেলতে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।