সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৭

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে একদিনেই রোগী ভর্তি ৪২৭

ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দায় চলছে চিকিৎসাসেবা

কবির হোসেন মিজি
ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দায় চলছে চিকিৎসাসেবা

ছবি ক্যাপশন: ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে তীব্র রোগীর চাপে ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বাইরে বারান্দায় নতুন বিছানা পেতে এভাবেই রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা নিতে দেখা যায়। ছবি: কবির হোসেন মিজি।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল তীব্র রোগীর চাপে ভারাক্রান্ত। একদিনেই রোগী ভর্তি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, হাসপাতালের অভ্যন্তরের শয্যাগুলো পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় রোগীদের ঠাঁই হয়েছে বারান্দা ও মেঝেতে। হাসপাতালের বারান্দায় শয্যা পেতে চিকিৎসা নেয়ার দৃশ্যই হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরছে।

রোববার (১২ অক্টোবর ২০২৫)-এর হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালে মোট ৪২৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। আর এই হিসেব একদিনের। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২৫০। অর্থাৎ অনুমোদিত শয্যার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে।

ওয়ার্ড অনুযায়ী রোগীর অবস্থান

খবর নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলা সাধারণত পুরুষ ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যদিও তথ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে বরাদ্দ ৬০টি বেড, কিন্তু রোগীর চাপে বাড়তি ২৮টি বেড বারান্দায় পাতা হয়েছে। যেখানে পুরুষ ওয়ার্ডে রোববার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো মোট ১১৫ জন। এছাড়া হাসপাতালের ৪র্থ তলার মহিলা ওয়ার্ডে এদিন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো ১২৩ জন, যা অন্য ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। শিশু ওয়ার্ডের ৩য় তলায়ও রোগীর চাপ বেশি, যেখানে ভর্তি ৭৮ জন শিশু।

এছাড়া সিসিইউ ক্যার্ডিওলজি বিভাগে ২৮ জন, গাইনীতে ৩৬ জন, কেবিনে ৩১ জন, নবজাতকের স্ক্যানো বিভাগে ১১ জন, আইসিইউতে ২ জন এবং ওয়ানস্টপ ইর্মাজেন্সি কেয়ারে ৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

চিকিৎসা ও হাসপাতালের প্রতিক্রিয়া

রোগীর এই লাগামহীন চাপের কারণে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনে ও পেছনে খোলা বারান্দায় অতিরিক্ত বেড পেতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে গরমকাল এবং বিভিন্ন মৌসুমী রোগব্যাধি বাড়ায় এই চাপ আরো বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, বারান্দায় চিকিৎসা নেয়ায় যেমন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না, তেমনি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নতুন স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে এতো বিপুল সংখ্যক রোগীর জন্যে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির সংকটও প্রকট।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই হাসপাতালে অনেক রোগীর চাপ রয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালকে পাঁচ শ'র বেশি রোগীর চাপ নিতে হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের জন্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়