সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১০

জিমি কাটার রচিত বইটির সর্বশেষ কপি সংগ্রহ করে ধন্য

ড. আব্দুস সাত্তার
জিমি কাটার রচিত বইটির সর্বশেষ কপি সংগ্রহ করে ধন্য

জিমি কাটার রচিত KEEPING FAITH বইটির শেষ কপি সংগ্রহ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। একই সাথে আমি আনন্দিত, উল্লসিত। মানুষ ইতিহাস বানায় আবার কিছু কিছু ইতিহাস চিরকাল মানুষকে অমরত্ব দেয়। সবই নির্ভর করে তাঁর কর্ম, ভাগ্য এবং ওপরওয়ালার ওপর। যে যা কিছুই করেন চাবি কিন্তু তার কাছে।

অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো জিমি কাটার প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরী এবং মিউজিয়াম দেখবো। আজ সত্যি অভিভূত হলাম দেখে। তিনি নিখুঁতভাবে তাঁর বাল্যকাল থেকে প্রেসিডেন্ট--তাঁর বউ বাচ্চা, ভালো কাজ খারাপ কাজ, এমনকি তিনি বিভিন্ন দেশ সফরকালে সোনা দানা যা পেয়েছেন সব এই মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা আছে। সত্যি আমি অভিভূত এবং মুগ্ধ হয়েছি দেখে। মিউজিয়াম ঘুরে বের হলাম তাঁর লাইব্রেরি দিয়ে। লাইবেরিতে অনেক কিছুই বিক্রি হয়, জিমি কাটার লোগো সহকারে সাথে বইও আছে। বইয়ের সারিতে দেখি কয়েকটি বই আছে। একটি বই 'JIMMY CARTER RIVERS & DREAMS', বইটি লিখেছেন JIM BARGER JR and DR. CARLTON HICKS, আরেকটি LILIAN AARTER, বইটি লিখেছেন HAYTER MENZIES, আরেকটি বই ROSALYNN CARTER, বইটি লিখেছেন WITHIN OUR REACH, আরেকটি বই জিমি কাটারের নিজের লেখা 'KEEPING FAITH'। জিমি কাটার ইসরাইল ও ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিয়ে মন্তব্য এবং কবিতাও লিখেছেন। কিন্তু তিনি যে নিজের প্রেসিডেন্সি নিয়ে বই লিখে ফেলেছেন ১৯৮২ সালে, আমার তা জানা ছিলো না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো KEEPING FAITH-এর কোনো কপি ছিলো না তাদের কাছে বিক্রি করার। আমি অনেক অনুরোধ করলাম, তাহলে আমি ডিসপ্লের কপিটি চাই। অনেক ভেবে চিন্তে আমাকে ডিসপ্লের কপিটি দিলেন এবং বললেন, এটাই আমাদের শেষ কপি। আপনি অনেক ভাগ্যবান। আমি জানি না আমি ভাগ্যবান কি না, তবে আমি আনন্দিত এবং উল্লসিত জিমি কাটার লাইব্রেরি থেকে তাঁর নিজের লেখা বইটির শেষ কপি সংগ্রহ করতে পেরে।

জিমি কাটারের বই নিয়ে পরে লিখবো। আজ মিউজিয়ামের দেখা কিছু অংশ লিখে দিলাম।

জর্জিয়া প্লেইন্স শহরের জন্ম নেওয়া কার্টার ১৯৪৬ সালে নেভাল একাডেমি থেকে পাস করে সাবমেরিনে চাকরি শুরু করেন। পরে বাবার চীনাবাদামের খামারে ফিরে আসেন। তিনি তাঁর বাড়িতে চীনা বাদামের চাষ করতেন এবং তিনি নিজেই চীনাবাদাম বিক্রি করতেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। এরপর ধাপে ধাপে রাজ্যের সিনেটর, গভর্নর হয়ে ১৯৭৬ সালে ৩৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি, পানামা খাল চুক্তি, স্ট্রাটেজিক আর্মস লিমিটেশন টকসের (স্যাল্ট-২) দ্বিতীয় দফা আলোচনার মতো বড়ো বড়ো বৈদেশিক নীতি চুক্তি সম্পন্ন করেন। এছাড়াও চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রেসিডেন্সি ছাড়ার পর তিনি 'কার্টার সেন্টার' প্রতিষ্ঠা করেন মানবাধিকার আর শান্তির কাজে। এই অসামান্য কাজের জন্যে ২০০২ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। শান্তি আলোচনা থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, আর বিশেষ করে গিনি কৃমির মতো উপেক্ষিত রোগ নির্মূলে তিনি সারা বিশ্বে ছুটে বেড়িয়েছেন। গরিবদের বাড়ি বানানোর সংস্থা 'হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি'তে তিনি নিজে হাতুড়ি-বাটাল হাতে কাজ করতেন, হয়ে উঠেছিলেন এরই এক প্রাণপুরুষ। উপরে যা লিখেছি সব কিছু সাজিয়ে রেখেছেন মিউজিয়ামে। আরও অনেক কিছু লেখার আছে আশা রাখি, পরের পর্বে লিখবো।

--ড. আব্দুস সাত্তার, ওয়াশিংটন ডি সি : কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। ১১ অক্টোবর, ২০২৫।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়