শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:০৭

পাঠক ফোরামের কবিতা

অনলাইন ডেস্ক
পাঠক ফোরামের কবিতা

এন জে রাবেয়া

ভয় থেকে বিশ্বাসে

মক্কার পথে এক বৃদ্ধা মহিলা, যার ভয়ে ভরা মন,

শুনেছেন মক্কায় আছে এক জাদুকর জন।

বৃদ্ধা বললেনÑ

‘আমার নিরাপত্তা চাই, তাই মক্কা ছেড়ে যাই’,

ভয়ে চললেন অজানার পথে একা তাই।

পথে দেখা হলো এক যুবকের সাথে, যার মায়ায় ভরা মন,

বদনাম, অভিশাপ শুনেও করলেন বৃদ্ধার সাথে নরম আচরণ।

গন্তব্যে পেঁৗছে দিলেন বৃদ্ধাকে শান্তিপূর্ণ হাতে,

কোনো রাগ, অভিশাপ ছিল না, সেই আলোর আভাতে।

বৃদ্ধা বললেনÑ

‘হে যুবক, কী তোমার পরিচয়? আমি জানতে চাই।

আর সবাইকে বলতে চাই, যে মক্কায় মুহাম্মাদের মতো এক জাদুকর বাস করে। সে মক্কায় তোমার মতো ভালো নওজোয়ানও থাকে’।

প্রিয় নবী বললেনÑ

‘হে বৃদ্ধা মা, আমিই সেই জাদুকর, যার ভয়ে আপনি মক্কা ত্যাগ করছেন’।

বৃদ্ধাটি অশ্রুসিক্ত নয়নে বললেনÑ

‘তাহলে আমাকেও কলেমা পড়াও, কারণ তোমার জাদু আমার উপরেও কাজ করেছে’।

ছবি-২১

মহসিন আলম মুহিন

মামার বাড়ি মধুর হঁাড়ি

মামার বাড়ি মধুর হঁাড়ি,

এই কথাটি নয় অজানা।

আদর-আমোদ কঁাড়ি কঁাড়িÑ

থাকলে পাশে নানি-নানা।

সকালবেলা চুলার পাড়েÑ

নাস্তা খাওয়া হরেক রকম,

দুপুর বেলা ‘পুকুর ঘাটেÑ

ডুব সঁাতারের পড়ে যে ধুম।

মামাতো’ ফুপাতো’ মিলেমিশেÑ

কথা চলে আগে পিছের,

নানান রকম খেলাও চলেÑ

আটকে’ স্মৃতি মিষ্টি মধুর।

মধুমাসেও জিহ্বা মজে ফলে,

পিঠাপুলিও শীতকালেতে চলে।

‘মামী-মা’দের মায়ের মতো স্নেহÑ

তুলনাতে নয় যে তারই কেহ।

দিনের শেষে, রাতেও বসেÑ

গল্প-কথা, মধুমাখা বুলি।

মামার বাড়ি মধুর হঁাড়িÑ

এতো আদর, কেমনে তারে ভুলি।

ছবি-২১

আব্দুস সাত্তার সুমন

শরতের গর্জন

ঝরঝরো শরতের গর্জন

আকাশ কালো মেঘে,

মুষলধরায় নামছে বৃষ্টি

ছুটছে অতি বেগে।

ঝাপটা দিচ্ছে গরম হাওয়া

ভাদ্র, আশ্বিন ক্ষণে,

নদ-নদী জলপ্রপাত

দোলায় সবার মনে।

শরতের সেই বজ্রপাতে

অস্থির হয়ে ওঠে!

উত্তাল সাগর শান্ত হয় না

ক্ষিপ্ত রাগের চোটে।

সাদা সাদা কাশফুলের

শীতল পাপড়িগুলো,

নীল আকাশে উড়ে বেড়ায়

শিমুল গাছের তুলো।

অপরূপা শরৎ মেলায়

হেমন্তে আনে শান্ত,

শিশির ভেজা শীত-গরমে

হয়ে প্রাণবন্ত।

ছবি-২১

খায়রুল আলম

বাদলা দিনের ঘুঙ্গুর

নামল আকাশ ভেঙে বৃষ্টি, বাজে যেন ঢোল,

ধানের খেতে নেচে ওঠে, জলের অঁাচল,

বঁাশবনে টুপটাপ, শব্দে মনটা ভরে,

চারদিকে কাদামাটির, গন্ধ গিয়াছে চরে।

নদীর পাড়ে, মাঝি গায় নৌকা টানা গান,

নদীর বঁাকে নয়া পানি, সবাই করে পান।

ঘাটে নতুন কলসি ভাসে, চোখে জল গৃহিণী,

উনুনের সঁ্যাতসঁ্যাতে পানি, আগুন জ্বলেনি।

বাদলা দিনে ঘুঙ্গুর বাজে, টুপুরটাপুর বৃষ্টি ঝরে,

বাংলার ঋতু বর্ষা, প্রকৃতিতে নতুন প্রাণ আনে।

ছবি-২১

জহিরুল হক বিদ্যুৎ

স্বপ্নের বিষণ্ন ক্যানভাস

যতটুকু সাজাতে চাই

তার চেয়েও বেশি চুরমার হয়ে যায়!

স্বপ্নের লতা বেয়ে উপরে উঠতেই

লতাগুলো নুয়ে পড়ে ঘুমভাঙা শহরে।

প্রত্যাশার স্বপ্নঝিলে ফোটে না নীলোৎপল,

নেই অলকানন্দায় অনিন্দ্য হিন্দোল।

রক্ত-ঘামে বেড়ে ওঠা ফসল খেয়ে ফেলে

দঁাতাল বুনো শুয়োরের দল।

প্রগলভ চিত্ত মানে না সরল সমীকরণ

কিংবা মানে না নিউটনের তৃতীয় সূত্র।

বেপরোয়া হিসেবের খাতায়

যখন অনুশোচনার গন্ধ থাকে না,

তখন দুঃখ কষ্ট কিংবা বিষণ্নতার সব রং

নগ্ন জ্যোৎস্নার আলোতে ধুয়ে নিলেও

সুখগুলো একদিন চঁাদের কলঙ্ক নিয়েই

ফিরে আসে এক নিঃসঙ্গ শাকুরা সন্ধ্যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়