প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ০৯:৫৩
পাঠক ফোরামের কবিতা

সজীব খান বে-খেয়ালি মন
তুমি কবে আসবে সখি
মোর সাঁঝের ঘরে
একাকিত্বকে আর সঙ্গ দিতে পারছি না।
বে-খেয়ালি মন
নীল আকাশের সাদা-কালা
আর কত দেখবো
কত দেখবো স্মৃতির অ্যালবাম।
আকাশের নীল
এখন আর ভালো লাগে না
ঠোঁটে জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে
বল একাকী ভাল থাকা যায়?
রাত যখন গভীর হয়
দরজা নাড়ে তখন একাকিত্ব আমার
তন্দ্রা নামেনি তখন দু চোখে
জানালার ফাঁক দিয়ে জোনাকিরা
আলো দিয়ে তোমাকে ভোলার ইঙ্গিত দেয়।প্রবাসে তুমি
দেখা হয় না কতদিন তোমার সাথে
দাওনি কোন টেলিগ্রাম
কেমন আছো ওগো বন্ধু তুমি
দূর ওই প্রবাসে।
মনে পড়ে তোমায়
অনেক অনেক বেশি
স্বল্প সময়ে সংসার আমার
একলা জীবন কেমনে কাটে।
অপেক্ষা আর ভালো লাগে না
কী করবো আমি
উত্তরও খুঁজে পাইনি।
জীবন নামের সংসারে
সাঁতপাকে বাঁধা তোমার সাথে
কূল পাইনি দরিয়ার
ব্যাকুল হয়ে অথৈ জলে
এখন শুধু সাঁতরাই।সুধীর বরণ মাঝি মায়ার জালে আবদ্ধ
নিভৃত রাতে চাঁদের আলো,
মনের মাঝে বাজে বেতার,
একটু হাসি, একটু কান্না,
ভেসে আসে অতীতের ধার।
চোখের পাতায় জলের রেখা,
ভেবেছিলাম ভুলে গেছি,
কিন্তু কোথায়? হৃদয় যে আজও
মায়ার জালে বাঁধা আছে।
কথার পিঠে কথা জমে,
নীরবতায় বাজে গান,
ভুলতে গিয়ে আরও গভীর
প্রেমের বুননে হয়ো পান।
তুমি আমি, এক সময়ের ছায়া,
আজ শুধু গল্পের পাতা,
তবুও কেন হৃদয় বোঝে না—
মায়া কাটে না, কাটে না মাতা।
চাইলে যদি, পারতাম বোধ হয়
ভুলের হিসেব মুছে দিতে,
আমি আর ফিরতাম না কাছে
তোমায় নতুন করে পেতে।
হোসেন বেপারী
মানুষ নওএই যে ফুটন্ত গোলাপের শোভা
তুমি তাকে কলুষিত করো
বিবেকের দরজা নড়ে না তোমার
তুমিতো মানুষ নও।শিশু আছিয়ার মতো ফুলকলি
পাপড়ি ফোটার আগেই ঝরে যায়,
শেখার আগেই মানুষ-পশুর ব্যবধান।মানুষের মতো অবিকল তুমি
হাত-পা-চোখ-কান সবই আছে
অথচ মানুষ নও তুমি, নিকৃষ্ট শ্বাপদ
মানুষের থাকে মানবিক সৌন্দর্যের অভিজ্ঞান।নাহিদুল ইসলাম
গ্রামের সকালনরম কুয়াশা ভেসে যায় মাঠে,
ঘুঙুর বাজে গরুর গলায়।
সোনালি রোদ মেখে ধানের শিষ,
নেচে ওঠে বাতাসের গায়।
পথের ধারে কদম গাছে,
পাখির কূজন মিষ্টি সুর।
গ্রামের প্রাণ, প্রকৃতির গান,
শান্তিমাখা সকাল ভর।মাহমুদ হাসান সজীব
নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গদেখছ কেবল বসে আনমনে টিভি থিয়েটার যাত্রা গানে
মন মাতানো ব্র্যান্ডের গানে মিরাক্কেল আর জলসাটানে নিজেকে করিয়া দান
ভাবছ না কেনো হচ্ছে কোথায় ইবোলার ন্যায় মরণ ব্যথায় অকালে ঝরছে কত শত প্রাণ।
ধর্ষণ আর নির্যাতনে ইভটিজিং আর ফাঁদের জালে স্বপ্ন নিষ্পেষিত কিশোরীর জন্মেই তার অংকুরেতে।
ভাবছ না কেনো এ জাতির তরে বাঙালিই শ্রেষ্ঠ বাঙালির তরে যেমন করিয়া গর্জে উঠিয়া স্বাধীনতা আনিয়াছি বাংলার ঘরে।
সময় অল্পÑআছে হাতে হয়তো এ কলম যেন থামবার নয়তো
জাগ্রত হও সবে বাঁচাও ভগ্নি, বোন, জননী মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবার তরে জীবন দিয়াই স্বাধীনতা আনি।
মুহাম্মদ শাহীন ভালোবাসা যদি হয় সত্যি
যদি সত্যিই ভালোবাসো বৃষ্টি,
তবে ছাতার আশ্রয় কেন?
ভিজে যাও, হারিয়ে যাও জলে
সেই তো প্রেমের চিহ্ন।যদি রোদকে ভালোবাসো হৃদয় থেকে,
তবে ছায়া খোঁজো কেন ডালের তলে?
পুড়ে যাও একটু, তবেই বুঝবে
ভালোবাসা কেমন জ্বলে!যদি হাওয়াকে মনে হয় প্রিয়,
তবে জানালার কপাট বন্ধ কর কেন?
ওর স্পর্শে হারিয়ে যাও চুপচাপ,
সেই তো যেন সত্য ভালোবাসা।ভালোবাসা মানে শুধু পাশে থাকা না,
ভালোবাসা মানে সহ্য করাও জানা।
রোদ, বৃষ্টি, হাওয়া সবটাই প্রেম,
চোখে নয়, হৃদয়ে রাখাই আসল।
ইমরান খান রাজ জলের মতই স্বাদহীন
আমি বাতাসের মতো মুক্ত
আমি পাহাড়ের মতো শক্ত
হারিয়ে যাই অজানায়
মিলিয়ে যাই অচেনায়।
আমি জলের মতই স্বাদহীন
আমি স্রোতের মতই বাধাহীন
চলি সহজ শান্ত পথে
চলি ক্লান্ত পাখির সাথে।
আমি মুক্তোর মতো স্বচ্ছ
শুকনো পাতার মতো তুচ্ছ
মিলিয়ে যাই রাতের আঁধারে
পিছুটান নেই কোন বাহারে।সালাহ্উদ্দিন হাজরা
আষাঢ়ের ঘণ্টাকদম ফুলের সুবাসে মন ডানা মেলে ওড়ে,
আষাঢ় শুধু ঘণ্টা বাজায়, বৃষ্টি ঝরে পড়ে।
স্নান করে ওই পাখপাখালি
আষাঢ় মাসে রোজ, ডাহুক হেঁটে নতুন পানির
নিত্য করে খোঁজ।
আষাঢ় মাসে সেজে ওঠে, সব চৌচির মাঠ-ঘাট,
আষাঢ়েতে জমে আড্ডা, নতুন গল্পের পাঠ।
আষাঢ় তাড়ায় সকল খরা, ডেকে আনে শান্তি,
শীতলতা ছড়িয়ে দেয়, দূর হয়ে যায় ক্লান্তি।মিলন সরকার
তাদের জন্য আমার প্রার্থনাযারা আমার এক নম্বর শত্রু
তাদেরকে রাখি আমার প্রার্থনায়
যারা আমার দুই নম্বর শত্রু
তাদেরকে রাখি আমার প্রার্থনায়
যারা আমার তিন নম্বর শত্রু
তাদেরকে রাখি আমার প্রার্থনায়
যারা আমার আজন্ম শত্রু
তাদেরকেও রাখি আমার প্রার্থনায়যারা আমাকে প্রতিনিয়ত অভিশাপ দেয়
কখনো আমার মুখ দেখতে চায় না
এমনকি আমার মৃত্যুও কামনা করে
তাদেরকেও রাখি আমার প্রার্থনায়যারা বলে আমার কুষ্ঠ হোক
আমি যেন অন্ধ হয়ে যাই
আমার দু চোখের আলো চিরতরে নিভে যাক
আমি যেন চলৎ শক্তি হারিয়ে ফেলি
তাদেরকেও রাখি আমার প্রার্থনায়যারা আমার স্ত্রী-সন্তানেরও অঙ্গল কামনা করে
যারা মুহুর্মুহু আমার সমূহ বিপদ কামনা করে
যারা বলে আমার মাথায় যেন বাজ পড়ে
আমার মুখে যেন পোকায় ধরে
আমি যেন বধির হয়ে যাই
আমি যেন শান্তিতে থাকতে না পারি
তাদেরকেও রাখি আমার প্রার্থনায়।
ক্ষুদীরাম দাস
ঈশ্বর তুমি সহায় হওআমি ক্লান্ত, অবসন্ন;
দেহ, মন অবস, চোখে ঘুম;
অথচ ঘুম আসে না।চতুর্দিকে মানুষ, আপন মানুষ;
ভালোবাসার মানুষ কই?
আমি একলা রই।কেউ আমায় বুঝে না,
আমি বুঝি না;
নিজেকে নিজে বুঝাই : বৃথা সান্ত্বনা।যখন কঠিন সময় পথ আগলে দাঁড়ায়; আমি সুখ হারিয়ে সুখ কুড়াই।
নীরবতা আমাকে পাগল ‘উপাধি’ দেয়; একা যে অসহায় সে; কূল নেই, কিনার নেই।
ঈশ্বর তুমি সহায় হও;
দূর কর আমার কালীমা সকল,
হও আমার পালক সহায়ক।এম. রেজোয়ান বাদল
ধিক্কারযবর দখল করে তোমরা,
চলবে কয়দিন আর?
সামনে এসে মহরা দিয়ে
সময় করছো পাড়।যদি জানতে তোমরা!
জীবন নামের রেলগাড়িটা
থেমে যাবে একদিন!
করতে না কখনো অন্যের ক্ষতি,
থাকতে নিরব নিথর।ভাব দেখে মনে হয়,
বেহেস্তি মানুষ!
আসলে তোমরা হলে
শয়তান নামের অ-মানুষ।ধিক্কার তোমার প্রতিভাকে ,
ভাব নিয়ে করো সুশন।
মন খুলে একবার চিন্তা করো,
এ জগতে আসলেই কে তোমার আপন?বাবাকে মেরে তোমরা,
সন্তানের কাঁধে রাখো হাত।
একবেলা খাবার জন্য
করো মোনাজাত।