প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৪৫
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মাঝে সংঘটিত ঘটনা নিয়ে ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষের বিবৃতি

ঘটনার প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হয়েছে। প্যারাডাইস ব্যাচেলর হোস্টেলে রাতের হামলা ছিলো পরিকল্পিত। নাটকের মূল সূত্রও এখন স্পষ্ট।
|আরো খবর
ঘটনার সারসংক্ষেপ : সম্প্রতি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রকৃত ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে এখন পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে :
এই হামলাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিলো ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং নিরীহ ছাত্রদের ফাঁদে ফেলে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো।
ভিডিও ফুটেজে যা দেখা গেছে : রাতের অন্ধকারে সিটি ইউনিভার্সিটির বিপুল সংখ্যক ছাত্র অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্যারাডাইস ব্যাচেলর হোস্টেলে হামলা চালায়। হোস্টেলের ভেতরে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়। বেশ ক'জন ড্যাফোডিল শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন এবং কিছু শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা ধরে নিয়ে যায়, তাদেরকে দড়ি বেঁধে নির্যাতন করা হয়, যা ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ফুটেজে দেখা গেছে, ছাত্রদের অপহরণের সময় ও তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় কোনো গাড়িতে আগুন ছিলো না, বরং পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিলো সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের হাতে। এতে প্রমাণিত হয় পরবর্তী সময়ে পরিবহন পোড়ানোর ঘটনাটি নাটকীয়ভাবে সাজানো হয়েছে।
পেট্রোল বোমা প্রস্তুতির প্রমাণ : আমরা সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের নিজস্ব ভিডিওতেই স্পষ্টভাবে দেখেছি যে, তারা পেট্রোল বোমা তৈরি ও ব্যবহার করছে। এ ঘটনাগুলোই ব্যবহার করা হয়েছে একটি সাজানো নাটকের অংশ হিসেবে, যাতে দোষ অন্যের ওপর চাপিয়ে নিজেদের অপরাধ আড়াল করা যায়।
ভুয়া তথ্য ও মামলা সংক্রান্ত বিভ্রান্তি : থানায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা করেছে’। কিন্তু আশপাশে হাজারো স্থানীয় মানুষ উপস্থিত থাকলেও কেউ ড্রোন দেখেনি। এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যেই এমন ভুয়া তথ্য যোগ করা হয়েছে।
মূল পরিকল্পনাকারী চিহ্নিত : আমরা বারবার বলেছিলাম, এ ঘটনার মূল রহস্য সঠিক তদন্তেই বের হবে। এখন সিটি ইউনিভার্সিটির করা মামলার মাধ্যমেই জানা গেছে যে, ঘটনাটি পরিচালনা করেছিলো ফাহাদ নামের এক ব্যক্তি, যিনি বহু আগে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন (নভেম্বর ২০০৩ সালে) স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে অসদাচরণের কারণে। তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু ছাত্রের সাথে সমন্বয় করে এ পরিকল্পিত ঘটনাটি ঘটান। অর্থাৎ এই পুরো নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখেছে একটি সংঘবদ্ধ স্বার্থান্বেষী চক্র, যারা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করেছে।
আমাদের অবস্থান : ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে ছিলো। আমাদের লক্ষ্য সবসময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও মানসিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। আমরা মিডিয়া ট্রায়াল বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণার পথে হাঁটিনি। বরং সমস্ত ভিডিও, তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিচ্ছি।
আমাদের দাবি :
(১) পুলিশ ও তদন্ত সংস্থাকে অনুরোধ করছি, প্যারাডাইস ব্যাচেলর হোস্টেলে হামলাকারী সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করা হোক।
(২) যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই ঘটনার স্ক্রিপ্ট রচনা ও মঞ্চস্থ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
(৩) ভুয়া মামলা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক।
(৪) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির পক্ষ থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত টিম কার্যকরভাবে কাজ করুক।
আমাদের আহ্বান : আমরা চাই,
* শান্তি, ন্যায়বিচার ও সত্যের জয় হোক।
* শিক্ষার্থীরা যেনো কোনো প্রকার উস্কানি, গুজব বা স্বার্থান্বেষী চক্রের প্ররোচনায় না পড়ে।
* প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেনো শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ শেখার পরিবেশ বজায় রাখে।
শেষ কথা : ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সত্য, শান্তি ও ন্যায়ের পথে আছে। আমরা বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রমাণ বিশ্লেষণই ঘটনার প্রকৃত চিত্র জাতির সামনে উন্মোচিত করবে। আমাদের ছাত্ররা নিরীহ; তারা শুধু নিরাপত্তা ও মর্যাদার জন্যই দাঁড়িয়েছিল।
এ ঘটনার মাধ্যমে জাতি যেনো শিক্ষা পায়, কোনো মিথ্যা নাটক নয়, বরং সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোই আমাদের আসল দায়িত্ব।








