শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৭

চাঁদপুর জেলা বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সম্মেলন সম্পন্ন

এমএ গাফফার।।
চাঁদপুর জেলা বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সম্মেলন সম্পন্ন
মাদরাসা শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণে ২৩ দফা দাবির প্রস্তাব নিয়ে বক্তব্য রাখছেন অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ শাহজাহান মাদানী।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে ইউরেশিয়া কনভেনশন হল, চেয়ারম্যান ঘাটে চাঁদপুর জেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সম্মেলন-২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ ছগীর হোছাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ শাহজাহান মাদানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ চাঁদপুর জেলার শাখার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুফতি আ.ন.ম. মাঈন উদ্দিন সিরাজী। আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা অ্যাড. মো শাহজাহান মিয়া, আল-আমিন স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন, মনিহার দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. নাজির আহম্মদ, পশ্চিম সকদী আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মো. মকবুল আহম্মদ, চাপাতলী দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মো. মনিরুল ইসলাম মজুমদার, নিশ্চিন্তপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মো. ফখরুদ্দিন, আল-আমিন মহিলা মাদ্রাসার সুপার মো. হাফিজুর রহমান, শাহতলী কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মো. বিল্লাল হোসেন, ভোলদিঘী কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মো. তৈয়বুর রহমান সহ অন্যরা। সম্মেলনে দারসুল কুরআন পেশ করেন অধ্যক্ষ মো. নাজিম উদ্দীন। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মাও. নূর মোহাম্মদ খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ শাহজাহান মাদানী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণে ২৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো : ১. ইতঃপূর্বে অনুমোদিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণ করতে হবে। দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও জাতীয়করণ নিশ্চিত করতে হবে। ২. ইবতেদায়ী প্রতিষ্ঠান খোলা ও এমপিওকরণের বিষয়টি সীমিত সময় না দিয়ে চলমান প্রক্রিয়ায় রাখা প্রয়োজন। ৩. ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দূরত্ব ১ মাইল করতে হবে। ৪. বিগত সরকারের আমলে প্রাপ্যতা থাকা সত্ত্বেও সারাদেশে বহু মাদরাসা দলীয় চিন্তায় এমপিওভুক্ত করা হয়নি। ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে এমপিওভুক্ত করতে হবে।৫. চলমান বিতর্কিত শিক্ষানীতি বাতিল করত মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা অক্ষুণ্ন রেখে শিক্ষানীতি ঘোষণা করতে হবে। ৬. দেশের মাদরাসা সংক্রান্ত কোনো কাজকে হয়রানি, পেরেশানি বা দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে রাখা যাবে না। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৭. প্রতি ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বছরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা ইসলামী চেতনা বাস্তবায়ন, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক গঠনের লক্ষ্যে এনসিটিবির ন্যায় আলাদা মাদরাসা টেক্সট বুক বোর্ড (MCTB) প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৯. ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং বিষয়ভিত্তিক দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ দ্বারা মাদরাসা শিক্ষার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। ১০. বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের বর্তমান অবস্থা করুণ। কয়েক হাজার ফাইল স্তূপ হয়ে আছে। এ সংকটের নিরসন করতে হবে। ১১. বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্যে দেশপ্রেমিক, শিক্ষানুরাগী, সৎ, যোগ্য ও দক্ষ জনবলের সমন্বয়ে দ্রুত বোর্ড কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। ১২. বিগত সরকারের আমলে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে যেসব দুর্নীতি হয়েছে তার তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। ১৩. অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৩/৬ মাসের মধ্যে তাদের পাওনা প্রদান করতে হবে। ১৪. প্রতি অর্থ বছরের বাজেটে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। ১৫. NTRCA কর্তৃক মাদরাসায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদারাসার বিষয় সংশ্লিষ্ট প্রশ্নপত্র ৬০% করতে হবে। ১৬. বিষয় সংশ্লিষ্ট মাদরাসার শিক্ষকদের পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগদান করতে হবে।১৭. মৌখিক পরীক্ষায় মাদরাসা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদেরকে ভাইভা বোর্ডে পরীক্ষক রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ১৮. দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১ টি করে মাদরাসা জাতীয়করণ করতে হবে। ১৯. প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ১টি মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করতে হবে। ২০. বিভিন্ন মাদরাসায় অনার্স চালু থাকলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষক দেয়া প্রয়োজন। ২১. প্রতি বিভাগে ১টি করে বি.এম.টি.টি.আই. প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ২২. ইবতেদায়ী মাদরাসা সমূহকে শিক্ষাবান্ধব করার লক্ষ্যে এবং ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সরকারি কোষাগার থেকে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে। ২৩. প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় মাদরাসা উইং খুলে ইউ.ই.ও. এবং ডি.ই.ও. নিয়োগ দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাও. মোহাম্মদ ছগীর হোছাইন বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণে সরকারকে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি আদায়ে আমরা ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ করার কথা ভাবছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়