শনিবার, ১০ মে, ২০২৫  |   ৩৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫, ০০:১১

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলীর চরলক্ষ্মীপুরে মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন

স্টাফ রিপোর্টার
পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলীর   চরলক্ষ্মীপুরে মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন

মতলব উত্তরের চরলক্ষ্মীপুরে মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেঘনা- ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম শাহেদ‌।

শুক্রবার (৯ মে ২০২৫) দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা দেখতে যান তিনি।

চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে প্রায় তিন হাজার সাধারণ মানুষ মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। এই শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠসহ স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেটি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

সেই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড মেঘনা ধনাগোদার নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম শাহেদ ঘটনাস্থল চরলক্ষ্মীপুর গ্রামে ছুটে যান। তিনি মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এছাড়াও চরলক্ষ্মীপুর সহ মেঘনা ধনাগোদা নদীর আরো কয়েকটি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সাধারণ মানুষকে নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

জানা যায়, ইতোমধ্যে মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে চরলক্ষ্মীপুরের শতাধিক বসতঘর, ফসলি জমি ও পারিবারিক কবরস্থান। হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামের একমাত্র স্কুল চরলক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই গ্রামে একটি মাত্র মাদ্রাসা ও মাজার রয়েছে, যেটি প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর যাবত ধীরে ধীরে ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে চরলক্ষ্মীপুরের কয়েক শত একর ফসলি জমি। নদীবেষ্টিত চরলক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই নদী ভাঙ্গনের কারণে এখানকার কৃষকরা প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব কোনো রকম ভাবে হলেও গ্রামবাসীকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন যাবত আমরা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছি। এই তিন মাস যাবত ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। আমাদের অনেক ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বসতভিটা নিয়ে আমরা আতংকে দিন যাপন করছি।

জমিজমাতে ফসলাদি করে আমাদের দিন চলে। সেই ফসলী জমিটুকুও নদীতে বিলীন হয়ে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। এই অবস্থায় সরকার যদি আমাদের বসত ভিটেটুকু রক্ষা করার ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে মাথা গোঁজার মত একটু জায়গা থাকে।

এখানকার মানুষের শহরে বা অন্য কোথাও গিয়ে জমি কিনে বসতি করার সামর্থ্য অনেকেরই নেই।

চরলক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এ এইচ এম জামাল সাকিব বলেন, পুরো গ্রামবাসীর জন্যে এই একটি মাত্র স্কুল রয়েছে এখানে। নদী ভাঙতে ভাঙতে প্রায় স্কুলের কাছে চলে এসেছে। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে স্কুল ও গ্রামবাসীকে রক্ষা করা যাবে না। আজকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ আমাদের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। তাই তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, যত দ্রুত সম্ভব এই গ্রামটিকে রক্ষা করতে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড মেঘনা ধনাগোদার নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম শাহেদ নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন, সরজমিনে আমরা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা দেখেছি। আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক মহোদয় কে নিয়ে আমরা আবার আসবো। এছাড়া নদী ভাঙ্গন রোধে যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়াও নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী প্রকল্পের জন্য আমরা সকল কাগজপত্র মন্ত্রণালয় প্রেরণ করেছি। দ্রুতই আশা করি ভাঙ্গন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুলতানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী প্রধান, স্থানীয় মুরুব্বী আলহাজ্ব কাজি নাসির উদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ইলিয়াস প্রধান ও আলহাজ্ব আব্দুল কাদির প্রধান, সেলিম প্রধান, কামরুজ্জামান রিপন, আলাউদ্দিন প্রধান ও মামুন প্রধান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়