বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ যৌথ বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ৯০ যানবাহনে তল্লাশি।। ১২ মামলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬ গাড়ি জব্দ
  •   হরিণা থেকে দু মাদক ব্যবসায়ী আটক
  •   কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩৯ জনের তথ্য চেয়েছে দুদক

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৮

স্বামীকে স্ত্রীর এসিড নিক্ষেপ ও কিশোরীর ‘ইভটিজিং’!

অনলাইন ডেস্ক
স্বামীকে স্ত্রীর এসিড নিক্ষেপ ও কিশোরীর ‘ইভটিজিং’!

‘পরকীয়ার জেরে ঘুমন্ত স্বামীর ওপর স্ত্রীর এসিড নিক্ষেপ ॥ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন জলিল ॥ স্ত্রী আটক’। এটি গত রোববার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় বক্স আইটেমে প্রকাশিত সংবাদ শিরোনাম। সংবাদটি পড়ে পাঠকমাত্রই আলোড়িত হয়েছেন। কারণ, গেলো বিংশ শতাব্দীর শেষ কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশে নারীর প্রতি পুরুষের সহিংসতার উল্লেখযোগ্য উপকরণ ছিলো এসিড। বুদ্ধিজীবী, সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন এনজিও’র আন্দোলনের মুখে সরকার ‘এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২’ প্রণয়ন ও পাস করতে বাধ্য হয়। এ আইনে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করায় নূতন শতাব্দীতে এসিড অপরাধ প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে। এমতাবস্থায় পুরুষের প্রতি নারীর সহিংসতা হিসেবে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় পাঠকের নড়েচড়ে বসাটাই স্বাভাবিক। সংবাদটিতে কবির হোসেন মিজি লিখেছেন, পারিবারিক কলহ ও পরকীয়ার সন্দেহে চরম পরিণতি ঘটলো রিকশাচালক আ. জলিলের । গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তার ওপর এসিড নিক্ষেপ করে তার মুখ, শরীর ও হাত ঝলসে দিয়ে পালিয়ে গেছে দ্বিতীয় স্ত্রী নারগিস বেগম। এসিড হামলায় গুরুতর আহত আব্দুল জলিল বেপারী (৪০) বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। জানা যায়, শুক্রবার (২৪ অক্টোবর ২০২৫) দিনগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের বসুর বাড়ির ভাড়াটিয়া আব্দুল জলিল বেপারীর ওপর এই বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়। আহত জলিল বেপারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজারের মৃত আবিদ আলী বেপারীর ছেলে। তার অভিযোগ, দ্বিতীয় স্ত্রী নারগিস বেগম পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলো। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই নারগিস বেগম ঠাণ্ডা মাথায় স্বামীর ওপর গভীর রাতে এসিড নিক্ষেপ করে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। গভীর রাতে এই ঘটনার পর শনিবার সকাল ১০টায় চান্দ্রা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার আলমগীর হোসেনের সহযোগিতায় গ্রাম পুলিশ হারুনসহ স্থানীয় কয়েকজন তাকে উদ্ধার করেন। দ্রুত তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্মরত চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন, এসিডে তার মুখমণ্ডল, হাত ও শরীরের বেশ কিছু অংশ মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ২য় তলায় চিকিৎসাধীন আছেন। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। এদিকে ঘটনার পর থেকেই নারগিস বেগম পলাতক থাকলেও পুলিশি তৎপরতায় অবশেষে ধরা পড়ে। সন্ধ্যার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাঁসা গ্রামে নারগিসের বাপের বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

স্বামী আ. জলিলের প্রতি সহিংসতার ঘটনায় স্ত্রী নারগিস বেগম ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় সাধারণ্যে স্বস্তি সঞ্চার হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এসিড অপরাধ আইন, ২০০২-এ এই উগ্র উচ্ছৃঙ্খল নারীর যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতে কার্যকর সকল প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কোনোরূপ কসুর করবে না।আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এতোদিন কিশোর-যুবক তার বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ইভটিজিং করেছে ও করছে শোনা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর-যুবক উত্ত্যক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এইতো সেদিন জেলা শিক্ষা বিভাগের এক পরিদর্শক একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় বললেন যে, ইদানীং কিশোরী শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠী কিংবা অন্য কারো প্রতি প্রেম নিবেদনে ব্যর্থ হয়ে সহিংস আচরণ করছে। উদাহরণস্বরূপ তিনি সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর দ্বারা সংঘটিত একটি ঘটনা উল্লেখ করলেন। তিনি জানান, ছাত্রীটি তার স্কুলের এক ছাত্রকে প্রেম নিবেদন করে আসছিলো কিছুদিন ধরে। এতে ছাত্রটি কিছুটা দুর্বল হলেও বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তাকে সাইকেলসহ রাস্তা থেকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে ঐ ছাত্রীটি। তিনি এটিকে এক প্রকার ‘ইভটিজিং’ আখ্যায়িত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এর প্রতিকার প্রত্যাশা করেন। আমাদের উদ্বেগ ও প্রত্যাশাও তা-ই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়