বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৭

মনোনয়ন নিয়ে গুজব ও হুমকি

অনলাইন ডেস্ক
মনোনয়ন নিয়ে গুজব ও হুমকি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রকৃত ও ফেক উভয় ধরনের আইডি থেকে চাঁদপুর জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে কখনো ১টি, আবার কখনো ২টি আসন বাদ রেখে বায়বীয় উপায়ে প্রায়শই ৩/৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন সম্পর্কে লিখে গুজব সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ কেউ তো আসন নং লিখে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ শব্দটির মাধ্যমে ব্যক্তিগত সন্তোষ প্রকাশ করতে গিয়ে গুজবের ডালপালা বিস্তারে সহায়ক হচ্ছেন। এমন গুজবে প্রভাবিত হয়ে ২-১টি আসনের বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রিয় প্রার্থীর মনোনয়নের দাবিতে মিছিল এবং সমাবেশে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য প্রদান করতে দেখা গেছে। ফরিদগঞ্জে বিএনপির উপজেলা আহ্বায়ক এমএ হান্নানের পক্ষে একাধিক নেতা তো রীতিমত বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ হুমকি দিয়ে ফেলেছেন। তবে এমএ হান্নান আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে সভা-সমাবেশে বলে চলছেন তাঁর কথাবার্তা। যেসব কথাবার্তা গণমাধ্যমে মুখরোচক শিরোনামও হয়ে চলছে। শনিবার তারুণ্যের সমাবেশে আলহাজ্ব এমএ হান্নান বলেছেন, ফরিদগঞ্জে আমি ধানের শীষের নির্বাচন না করলে তারেক রহমান বা স্থায়ী কমিটির কেউ করবেন, অন্য কেউ নয়। তিনি বিএনপির ৩১দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তরুণ সমাজের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে উল্লেখিত তারুণ্যের সমাবেশে বক্তৃতা করেন। শনিবার বিকেলে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের বাসারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আমজাদ হোসেন শিপনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ফরিদগঞ্জ বিএনপি ও লক্ষ লক্ষ সমর্থকের জন্যে আমার দীর্ঘ ত্যাগ রয়েছে। সাবেক এমপি প্রয়াত আলমগীর হায়দার খান যখন থেকে বিএনপির দায়িত্ব আমার ঘাড়ে দিয়ে গেছেন, তারপর একদিনের জন্যেও বিএনপি থেকে বিচ্যুত হইনি। দলের কোনো পদে না থেকেও বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্যে নিবেদিত কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। বিনিময়ে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে বিএনপি আমাকে মূল্যায়ন করেছে। এর পাশাপাশি বিএনপির কর্মী-সমর্থক ও আপামর জনগণ আমার পাশে ছিলেন এবং অদ্যাবধি রয়েছেন। কিন্তু দলের এক কুচক্রী দলের বিরুদ্ধে যেয়ে আমার মনোনয়ন কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু এবার তা হবে না। দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের সকল জরিপে আমি অনেক ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছি। দলের সর্বোচ্চ মহল তা জানেন। যদি কোনো কারণে আমি ফরিদগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করতে না পারি, তাহলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান অথবা স্থায়ী কমিটির কেউ এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন, অন্য কোনো প্রতারক নয়। আমি জনপ্রতিনিধি না হয়েও গত তিন দশকে উপজেলার উন্নয়নে যা করেছি, তা অন্য কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও করতে পারেননি। তাই আমার বিশ্বাস, দলের বাইরেও উপজেলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আমার প্রতি ভালবাসা রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমার প্রতি ভালবাসার জবাব দেবেন বলে প্রত্যাশা করি। লক্ষ্য করা গেছে, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়নের প্রশ্নে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনাটা বেশি। তবে সেটা এখনো সাংঘর্ষিক পর্যায়ে যায় নি। অথচ চাঁদপুর-১ (কচুয়া), চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) ও চাঁদপুর-৩ আসনে দু মনোনয়ন প্রত্যাশীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইতোমধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিকে কোনো অ্যাকশনে যেতে দেখা যায়নি। সে আলোকে ফরিদগঞ্জসহ অন্য আসনে এ সংঘর্ষ যে সংক্রমিত হবে না সেটার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। সেজন্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বক্তৃতা-বিবৃতিতে হুমকি প্রদান করার বিষয়ে বিরত থাকতে সতর্ক করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়