প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৫৪
যেখানে সমালোচনা, সেখানেই সম্মান: শ্রীনগরের যুবকরা দেখালেন সমাজসেবার পথ
যুবকদের হাতেই ঐতিহ্য রক্ষা!
কবরস্থানের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে প্রশংসনীয় উদ্যোগ

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মধ্যবাঘড়ায় অবস্থিত আব্দুস সালাম খান কবরস্থানটি এ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ কবরস্থান। এখানে বাঘড়া, রুদ্রপাড়া, জাহানাবাদ ও কাদিরকান্দা এলাকার মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়।
|আরো খবর
দীর্ঘদিন ধরে কবরস্থানের ভেতর ঘাস ও কাশবন বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর জন্য এটি একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছিল। এ অবস্থায় দক্ষিণ জাহানাবাদের আলাউদ্দিন খান সাহেবের বড় ছেলে নজরুল ইসলাম খান নিজ উদ্যোগে কবরের ঘাস পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন। তার এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার একদল যুবক স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন।
তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পুরো কবরস্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। স্থানীয়রা এ মহতী কাজে অংশগ্রহণকারী যুবকদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও প্রশংসা জানিয়েছেন। এলাকার মুসল্লিরা বলেন, “খারাপ কাজে যেমন যুবকদের সমালোচনা করা হয়, তেমনি ভালো কাজে তাদের প্রশংসা করলে ভবিষ্যতে তারা আরও উৎসাহিত হবে।”
এছাড়া কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটি নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কবরস্থানের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ, বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা, বৃষ্টির সময় কবর নষ্ট হওয়া রোধে অস্থায়ী ঢাকনা (সাউনির) ব্যবস্থা করা হয়েছে। কবরস্থানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—এক স্থানে পুরুষ, অন্য স্থানে নারী ও পৃথক স্থানে শিশুদের দাফনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে বর্ষা ও বন্যার সময় দাফনে যেন বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য মাটি দিয়ে কবরস্থানকে উঁচু করা হয়েছে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন তত্ত্বাবধায়কও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবছর এ কবরস্থানে বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাহফিল থেকে প্রাপ্ত আয়ের একটি বড় অংশ কবরস্থানের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হয়।
স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ তরুণ সমাজকে সমাজসেবামূলক কাজে আরও উদ্বুদ্ধ করবে এবং এলাকায় ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ