প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৭
নারী সুদ ব্যবসায়ীর এতোটা দৌরাত্ম্য কিসের জোরে?

‘ফরিদগঞ্জে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা ॥ নারী সুদ ব্যবসায়ী আটক’-গতকাল এ সংবাদটি চাঁদপুর কণ্ঠে পরিবেশন করেছেন প্রবীর চক্রবর্তী। সংবাদটির বিবরণ হচ্ছে : ফরিদগঞ্জে সুদের লাভের টাকা পরিশোধ করতে না পারাসহ পূর্ব বিরোধের জের ধরে শাহনাজ বেগম লাকি (৩৬) নামের এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাতে উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের উপাদিক গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার শাহনাজ বেগম লাকি ওই গ্রামের আমিনুল খানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নাছিমা বেগম (৪২) নামে ওই সুদের ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুুলিশ। সে একই গ্রামের প্রতিবেশী হাফিজ মিয়ার স্ত্রী।
দগ্ধ শাহনাজ বেগমের স্বামী আমিনুল খান জানান, সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগমের সাথে তাদের গত কয়েক মাস ধরেই সুদের টাকা পরিশোধ ও স্ট্যাম্প দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিলো। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতঃপূর্বে আমার স্ত্রীকে কয়েক দফা মেরেছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে আমার স্ত্রীকে পেছন দিক থেকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আমিসহ লোকজন তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে অবস্থার অবনতিতে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান কর্মরত চিকিৎসক। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে। এই ঘটনাটি নাছিমা বেগম আরো কয়েকজন লোকের সহযোগিতায় করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, এই নারীর বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সে আরো উগ্রতা দেখিয়ে শাহনাজ বেগমের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। নাছিমা বেগমের দ্বারা এলাকার অনেক নিরীহ মানুষ নির্যাতিত। ঘটনার বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, এ ঘটনায় নাছিমা বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সুদখোর মানেই নির্মম, নিষ্ঠুর। তাই বলে কি নারী সুদখোরও? ফরিদগঞ্জে নাছিমা সুদের অনাদায়ী টাকার জন্যে শাহনাজ বেগমের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়ার মতো যে দৌরাত্ম্য প্রদর্শন করেছে, সেটা কিসের কারণে? কোন্ খুঁটির জোরে? পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে না অন্য কারণে সেটার তদন্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের করা উচিত। পাশাপাশি নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার সংস্থার তদন্ত করাও দরকার। যদি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কারো খুঁটির জোরে সুদখোর নাছিমা এতোটা নিষ্ঠুর হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে, শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নাছিমার সুদের লালসায় শাহনাজ যতোটা দগ্ধ হয়েছেন, তাতে তিনি কবে নাগাদ সুস্থ হয়ে উঠেন, সেটা বলা কঠিন। তাকে বাঁচানোর চেষ্টার পাশাপাশি এমন নির্মম ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রয়াস চালাতে হবে আত্মীয়-অনাত্মীয়, প্রতিবাদী-সচেতন সকল মানুষকে।