প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০০
বনজ ও ফলদ সম্পদের যত্ন নিতে ইসলামের নির্দেশনা

মানুষের জীবন ও জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রকৃতি। গাছ, ফল, ফুল ও বনজ সম্পদ শুধু মানুষের খাদ্য ও আশ্রয়ের উৎস নয়, বরং পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যে অপরিহার্য। ইসলাম এই বনজ ও ফলদ সম্পদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তিনিই তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আল-বাকারা : ২৯)। অর্থাৎ, বনজ ও ফলদ গাছপালা মানুষের জন্যে আল্লাহর দান। এগুলোর সংরক্ষণ ও সঠিক ব্যবহার ঈমানদারের দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) গাছ লাগানো ও পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এক হাদীসে তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি একটি গাছ রোপণ করে, যতদিন সে গাছ থেকে মানুষ বা প্রাণী উপকৃত হয়, ততদিন তা তার জন্যে সদকা হিসেবে গণ্য হয়। (সহীহ বুখারি)। ইসলাম শুধু গাছ লাগাতে উৎসাহ দেয়নি, বরং গাছের প্রতি অন্যায় আচরণ থেকেও বিরত থাকতে বলেছে। যুদ্ধকালেও নবী করিম (সা.) সাহাবিদের নির্দেশ দিতেন, গাছ কাটবে না, ফসল নষ্ট করবে না। এটি প্রমাণ করে, ইসলাম পরিবেশ ও বনজ সম্পদের প্রতি কতোটা সহানুভূতিশীল।
বর্তমান সময়ে বন উজাড়, ফলদ গাছের অযত্ন ও পরিবেশ দূষণের কারণে প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বৃষ্টিপাতের অনিয়ম, মাটির উর্বরতা হ্রাস ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অন্যায় ও অপচয়। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। (সূরা আল-ইসরা : ২৭)। তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, বেশি করে গাছ লাগানো, ফলদ-বনজ সম্পদের সঠিক যত্ন নেওয়া, গাছপালা বিনষ্ট না করা এবং প্রকৃতিকে আল্লাহর নিয়ামত হিসেবে সংরক্ষণ করা।
পরিশেষে বলা যায়, ইসলাম প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা দিয়েছে। বনজ ও ফলদ সম্পদের যত্ন নেওয়া শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়, বরং তা একপ্রকার ইবাদতও বটে।







