প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৩২
চাকসু নির্বাচন নিয়ে অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন
প্রশাসনের একপেশে ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা চাকসু নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়ম, প্রশাসনের একপেশে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ এনে অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল সংবাদ সম্মেলন করেছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য দেয়া হলো।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত চাকসু নির্বাচনের আয়োজনের পর আমরা মনে করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক ছাত্ররাজনীতি চর্চায় ভিন্নতা আসবে, গুণগত মান পরিবর্তন হবে। জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে সবার মাঝে বৈষম্যহীন মানসিকতা সৃষ্টি হবে।সব জায়গায় স্বচ্ছতার জায়গা ফিরে আসবে। কিন্তু আজ চাকসু নির্বাচনের শুরুতে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি থাকলেও প্রশাসনের একপেশে আচরণ, বিভিন্ন প্রার্থীর শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করাসহ বিভিন্ন আপত্তিকর বিষয় উঠে এসেছে। যা এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। যেমন
১। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি ভবনের ২১৪ নম্বর কক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষরবিহীন ২০টি ব্যালেট পেপার বাক্সে প্রবেশ করানো হয়েছে। দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানানো সহ চ্যানেল ২৪ এবং আরটিভিতে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি করছি।
২। আমরা বিভিন্ন ভোটারের সাথে কথা বলে জেনেছি পানি দিলেই মুছে যাচ্ছে অমোচনীয় কালি। আমরা মনে করি, এটা প্রশাসনের উদ্দেশ্যমূলক গাফিলতি। অনেকের মতো আমরাও বিষয়টি জালভোট কাণ্ডে ব্যবহার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকার শংকা করছি।
৩। ভোটকেন্দ্রের গোপন বুথে একজন প্রার্থী উদ্দেশ্যমূলক ছাপানো প্যানেল কপি রেখে আসার অভিযোগ করেছে অসংখ্য ভোটার। প্রিজাইডিং অফিসাররা শোনার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
৪। আমাদের প্যানেলভুক্ত প্রার্থী ইসমাইল ফাহিমের দেয়া তথ্যমতে, বিবিএ ফ্যাকাল্টি ভবনের ৩৩৫ নাম্বার রুমে ইতোমধ্যেই ভোট প্রদান করা একজন ভোটারের আইডি কার্ড নিয়ে একজন ভোট দেয়ার চেষ্টা করেছে। ছাত্রী সংস্থার একজনকে ধরছে আরেকজনের জাল ভোট দেয়ার জন্যে।এছাড়াও চাকসু নির্বাচনে অনেকগুলো ভোটপ্রদান কক্ষে ভোটারদেরকে ব্যালট পেপার দেয়ার পর স্বাক্ষর নেয়া হয়নি।
৫। সব প্যানেলের জন্য অনুমোদিত পর্যবেক্ষক লিস্ট দেয়া হলেও অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের জন্য কোনোধরনের পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। আজ সকালে স্বাক্ষরযুক্ত পর্যবেক্ষক কার্ড দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অবেহলা করেছেন। তারা এ প্যানেলের প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ করেছেন।
৬। আইটি ভবনের ৩০৯ নম্বর ভোটকক্ষের সামনে রাখা টেবিলে শিবির সমর্থিত প্যানেলের লিফলেট রাখা, ভোটকালীন সময়ে ভোটারদের প্রভাবিত করাসহ আইটি ভবনের সামনেই নির্বাচনি ক্যাম্প বসানো হয়েছে। যা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্গন।
৭। অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্যের প্রার্থীদের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধাদান, ভিপিপ্রার্থী ফরহাদুল ইসলামের সাথে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অশোভন আচরণের নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি । আমরা মনে করি একটি বিশেষ পক্ষের হয়ে তারা কাজ করছে। এ ধরনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা এ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের প্রতিকার চাই।
৮। প্রবেশের সময় ছবিযুক্ত আইডিকার্ডগুলো চেক না করার কারণে বহিরাগতদের সংখ্যা ছিলে বেশি। নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে কাজ করতে আসা এসব বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ছিলো দৃষ্টিকটু। পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়ে তাদের অবস্থান রহস্যজনক।
আমরা উপরের বিষয়াবলির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জবাব চাই। চাকসু কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর নয়। এখানে প্রবেশাধিকার থাকবে সব শিক্ষার্থীর, বহিরাগতদের নয়।আমরা চাকসু নির্বাচন নিয়ে ওঠা আপত্তি অভিযোগ আমলে নেয়ার আহ্বান এবং সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি । নিবেদক-মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম,
ভিপি পদপ্রার্থী
অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।